ছায়াছন্দ প্রতিবেদক : নবাগতা সুনেরাহ বিনতে কামাল চলচ্চিত্রে অভিনয় করে প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করেছেন। তানিম রহমান অংশু পরিচালিত ‘ন’ডরাই’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর ক্যাটাগরিতে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার – ২০১৯’ পেয়েছেন তিনি। সম্প্রতি অভিনয় করেছেন একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্রে। এসব বিষয় নিয়ে সুনেরাহ মুখোমুখি হয়েছিলেন এই প্রতিবেদকের সঙ্গে।
সুনেরাহর জন্যে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান এক উল্লেখযোগ্য ঘটনার দিন। ওই দিন তিনি পুরস্কার হাতে নিয়ে বলেন, অনেক কষ্ট করেছি এই ছবিতে অভিনয় করার সময়। নমিনেশন পেয়েই খুশি ছিলাম। পুরস্কার পেয়ে যাওয়াটা সত্যিই স্বপ্নের মতো আমার কাছে। তবে একটা দু:খ থেকে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিতে পারিনি। কথাগুলো ওইদিন তিনি বেশ আর্দ্র কণ্ঠে বলেছিলেন।
প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে সুনেরাহ বলেন, এখন আরও ভালো অভিনয়ের দায়িত্ব বেড়ে গেছে। পুরস্কারটা ভারী অনেক। আমার কাঁধে এখন অনেক বড় দায়িত্ব চাপলো। এই পুরস্কারের মর্যাদা বজায় রাখার দায়িত্ব। যেনতেন কাজ করা চলবে না। যদিও আমি শুরু থেকেই গল্পের প্রতি গুরুত্ব দেই। এখন আরও বেশি মনোযোগ দিচ্ছি অভিনয়ের ক্ষেত্রে।
ভবিষ্যত নিয়ে সুনেরাহ অকপট উচ্চারন হলো – জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আমার কাজের ধরণ বদলে দিয়েছে। যে কাজের প্রস্তাব আসবে তা পরিণত মস্তিষ্কে দেখতে হবে। দেশের বাইরে যদি কাজের সুযোগ আসে তাহলে এমনভাবে কাজ করবো যেনো সেই কাজে বাংলাদেশের সুনাম বাড়ে।
জানা যায়, নিউ ট্যালেন্টেড অভিনেত্রী সুনেরাহ সম্প্রতি শেষ করেছেন ‘ক্লোজআপ কাছে আসার গল্প’ সিরিজের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র শংখ দাস গুপ্ত পরিচালিত ‘শূন্য থেকে শুরু’। এখানে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন তাহসান খান। ভালোবাসা দিবসের এই কাজটি প্রসঙ্গে সুনেরাহ বলেন, শ্রীমঙ্গল ও ঢাকায় কাজটি করেছি। তাহসান ভাইয়ের সাথে কাজের অভিজ্ঞতা চমৎকার। এই কাজটির জন্য ড্রাইভিং, সাইক্লিং শিখেছি। সাইক্লিং পারি, তবে ছোটবেলায় পা ছিলে যাওয়ায় একটা ভয় কাজ করেছে।
পাল্টা প্রশ্নে তাকে বলা হয়েছিল – যে সুনেরাহ সার্ফিংয়ের মতো কঠিন একটি কাজ সহজ বানিয়েছেন তিনি ভয় পাবেন ? এর উত্তরে সুনেরাহ স্মিত হেসে ব্যাখ্যা করলেন, পানিকে ভয় পাইনা। সার্ফিং শিখতে ভয় লাগেনি, কারণ পানি ছিলো। পড়লে পানিতে পড়বো। কিন্তু এখানে তো রাস্তা! তাই ভয়টা বেশিই ছিল।
কথায় কথায় সুনেরাহ জানান, তিনি কাজ করতে ভালোবাসেন। আলসেমি করে বসে থাকা তার অভিধানে নেই। এই প্রসঙ্গে তার ভাষ্য – আমার না কাজ করতে ইচ্ছে করে। কিন্তু মনের মতো কাজের সংখ্যা তো কম। চাকরি আমার বিশ্রামের জায়গা। বসে থাকতে পারিনা, কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। এই বিষয়ে আরেকটু বিশদ ভাবে জানালেন, কোনও মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়লে তা সময়ের সাথে বদলে যায়। কিন্তু অভিনয়ের প্রেমটা অন্যরকম। এই প্রেম সবসময় একই থাকে। তাই কাজের মাঝেই ডুবে থাকার চেষ্টা করি।
সুনেরাহ যে সময়টায় দেশীয় চলচ্চিত্রের নায়িকা হলেন, সেই সময়ে দেশীয় চলচ্চিত্র নানা সঙ্কট বিদ্যমান। এই চ্যালেঞ্জ সুনেরাহ কী করে সামলাবেন ? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি এই ব্যাপারে বেশি কিছু জানিনা। তবে নিজের কথা বলতে পারি। আমি ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি থেকে এসেছি। নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদ ছিলো মনের মাঝে। সবাইকে জানাতে চেয়েছি আমি অভিনয়ও পারি। যাতে করে সবাই ইতিবাচকভাবে দেখে। তবে এখন ভালো কাজও হচ্ছে। দর্শক দেখছে। যার যোগ্যতা থাকবে সে টিকে যাবে। এই ভাবনা নিয়েই আমি কাজ করছি।
সুনেরাহর কাছে প্রশ্ন ছিল – সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হচ্ছেন অনেক প্রতিষ্ঠিত তারকা। এই প্রসঙ্গে আপনার কী ভাবনা ? তিনি বলেন, আমার না অন্যের ওয়ালে ঘুরতে ভালো লাগে না। আমি নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকতে ভালোবাসি। ইনস্টাগ্রামে ছবি দিয়ে দেখি কেমন লাগছে। নিজের পুরনো ছবি দেখি, আর সেই সময়ের কথা মনে করি। একটা ইউটিউব চ্যানেলও আছে আমার। ওই যে বললাম নিজের জন্য পোস্ট করি। তাই ওটা নিয়ে তেমন কিছু করা হয়নি।
আগামীতে সুনেরাহকে কেমন অবস্থায় দেখতে পাওয়া যাবে ? এমন প্রশ্নের উত্তরে সুনেরাহ’র ঝটপট উত্তর, ভাঙাচোরা অবস্থায় বা একদম টিপটপ অবস্থায়। মন বলে এটা করলে ভালো, পরক্ষণে মস্তিষ্ক বলছে এটা ঠিক না। দুটো একসাথে কাজ করলে টিপটপ অবস্থায় পাবেন। না হয় তো তার উল্টোটা।
আপনার মন্তব্য দিন