সিনথিয়া ইসলাম সিলভী : কুমড়ো বড়ি শব্দটির সঙ্গে আমরা ভোজন বিলাসীরা কম – বেশি পরিচিত। এটি এক প্রকার খাবার অনুষঙ্গ। সাধারণত মাছের ঝোল কিম্বা নিরামিষ সবজিতে এটি ব্যবহার করা হয়। এটি উল্লিখিত খাবারের সঙ্গে রান্না করলে খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে আরও মুখরোচক করে তোলে। আমাদের গ্রাম বাংলায় এটি বিশেষ পরিচিত খাবার অনুষঙ্গ। আরেকটি কথা – এই কুমড়ো বড়ি কিন্তু সিদ্ধ করে ভর্তা বানিয়েও খাওয়া হয়।সেদিন আমাদের গ্রামের বাড়িতে কুমড়ো বড়ি তৈরি করলাম। এটি তৈরির প্রণালি তথা তৈরি করার গল্প আজ আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। এতে করে যারা এই কুমড়ো বড়ি খেতে পছন্দ করেন, তারা বাড়িতেই এটি তৈরি করে নিতে পারবেন। আসুন এটি তৈরির প্রক্রিয়াটা জেনে নিই।
উপকরণ :
কাঁচা মাসকলাই ডাল, চাল কুমড়া, পাঁচ ফোড়ন, লবণ।
প্রণালি :
কলাই ডাল আগের দিন ভিজিয়ে রেখে পরদিন ভাল করে ধুয়ে উপরের কালো খোসাটা অনেক বার ধুয়ে ধুয়ে উঠিয়ে নিয়েছিলাম। তারপর সেই ডাল শিল পাতায় মিহি করে বেটে এর সঙ্গে চালকুমড়া কুঁচি কুঁচি করে কুড়ে নিয়ে ভাল করে চিপে পানি ফেলে দিয়ে ডাল বাটার সাথে মিশিয়ে নিয়েছিলাম। এর সঙ্গে পাঁচ ফোড়ন দেওয়া হয়েছে।
এরপর মেশানো ডাল অল্প অল্প করে বড় থালায় নিয়ে ভাল করে ফেটিয়ে (এক অংশ নিয়ে ফেটাতে ২০-২৫ মিনিট লাগে) নেওয়া হয়েছে। ভাল ভাবে ফেটানো হয়েছে কিনা পরখ করার জন্য বোলে পানি নিয়ে অল্প একটু মিশ্রণ পানির উপর দিলে যদি ভেসে থাকে, তখন বুঝতে হবে ঠিকমতো ফেটানো হয়েছে। তারপর টিনের পাত্রে কিম্বা বাঁশের তৈরি চালা অথবা কাপড় বিছিয়ে এর উপর হাতের মুঠোর সাহায্যে সারিবদ্ধ বড়ি সাজানো হয়।
এই বড়িগুলো কড়া রোদে ২ – ৩ দিন শুকিয়ে তারপর রান্না করার জন্যে এগুলো পুরোপুরি তৈরি হয়।
আমি যত সহজে লিখলাম, এটি তৈরির ব্যাপারটা কিন্তু এত সহজ না। অনেক ঝামেলার কাজ, কষ্টের কাজ। একটু এমন তেমন হলেই বড়ি সিদ্ধ হয় না। সব কিছু সঠিকভাবে করতে হয়। কিন্তু এটি তৈরি করতে যেমন কষ্ট, খেতে ঠিক ততটাই মজা। তরকারিতে বড়ি দিলে তরকারির স্বাদটাই অন্যরকম হয়ে যায়।
সিনথিয়া ইসলাম সিলভী : নারী
উদ্যোক্তা ( কর্ণধার, সিলভীস এরিনা )
আপনার মন্তব্য দিন