ছায়াছন্দ প্রতিবেদক : বাক প্রতিবন্ধিরাও সমাজের অংশ। সকল সুযোগ সুবিধা নিয়ে স্বাভাবিক মানুষদের মতো ভালোভাবে বেঁচে থাকার অধিকার তাদেরও রয়েছে। মানুষের একটু ভালোবাসা ও সহযোগিতা পাল্টে দিতে পারে বাকপ্রতিবন্ধিদের জীবনের গল্প। বাকপ্রতিবন্ধির প্রতি স্বাভাবিক মানুষদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ নিয়ে মিলাদ বড় ভূঁইয়া নির্মাণ করেছে ভিন্নধর্মী গল্পের খন্ড নাটক ‘সাইলেন্ট প্রপোজ’। দীর্ঘদিন পর এ নাটকের মাধ্যমে কাজে ফিরলেন গুণী নির্মাতা মিলাদ বড় ভূঁইয়া।
বাকপ্রতিবন্ধিরা সমাজের সাধারণ মানুষদের থেকে নানা দিক থেকে একটু পিছিয়ে থাকে। আর সমাজের এই বিশেষ শ্রেণীর প্রতি শৈশব থেকেই দূর্বল ইলা। এই দূর্বলতা থেকেই বিশেষ শ্রেণীর এই মানুষদের জন্য কিছু করার স্বপ্ন সেই ছোটবেলা থেকেই বুকের ভেতরে লালন করে আসছে ইলা। অন্যদিকে বান্ধবী রিয়া একটি বধির স্কুলে শিক্ষকতা করে। সেই সুবাদে বাকপ্রতিবন্ধিদের জীবনের অনেক গল্প জানতে পারে ইলা। তাদের সাথে মিশতে গিয়ে সাইন ল্যাঙ্গুয়েজে কথা বলার এক পর্যায়ে ইলাও তাদের জন্য কিছু একটা করার ইচ্ছা ব্যক্ত করে বান্ধবী রিয়ার কাছে। এরই মধ্যে একদিন জয় তার গাড়িতে লিফট দেয় বাকপ্রতিবন্ধি এক কিশোরকে। বিদায় বেলায় ওই কিশোরের সাথে সাইন ল্যাঙ্গুয়েজে ইশারায় কথা বলে স্বাভাবিক মানুষ জয়। এই দৃশ্যটি দূর থেকে দেখে ইলা ভাবে জয়ও বাকপ্রতিবন্ধি। বাকপ্রতিবন্ধিদের প্রতি দূর্বলতার কারণে ইলাও অনেকটা দূর্বল হয়ে পড়ে জয়ের প্রতি। অন্যদিকে আরেকদিন জয়ের সাথে ইলার দেখা হয় একটি রেস্টুরেন্টে। তখন বাকপ্রতিবন্ধি বান্ধবী রিয়ার সাথে সাইন ল্যাঙ্গুয়েজে কথা বলছিল ইলা। এই দৃশ্যটি দেখে জয়ও ভেবেছিল ইলাও বাকপ্রতিবন্ধি। সেই থেকে ইলার প্রতি তার একটা ভালোলাগা কাজ করে।
রেস্টুরেন্টে পরিচয় থেকে ঘণিষ্ঠতা। এরপর ধীরে ধীরে তা প্রণয়ে গড়ায়। এসএমএস’এর মাধ্যমে চলতে থাকে দুজনের হৃদয়ের লেনাদেনা। হঠাৎ একদিন জয়ের জন্য পাত্রী ঠিক করে তার মা, আর ইলার জন্য পাত্র ঠিক করে তার বাবা। মায়ের কথা রাখতে গিয়ে ইলাকে এড়িয়ে চলে জয়। জয়ের কাছ থেকে পাওয়া কষ্টের কারণে ইলাও তার বাবাকে জানায় পাত্র ঠিক করতে। একসময় দুজনের বিয়ে হয়। বাসর ঘরে গিয়ে ঘটে ভিন্ন ঘটনা। দুজনেই জানতে পারে তারা কেউই বাকপ্রতিবন্ধি নয়। ভালোবাসা পেতে পরস্পরের প্রতি প্রতারণার অভিযোগ তোলে। মধুর বাসরে শুরু হয় ঝগড়া। ইলা ও জয় পরস্পরকে নিজেদের অতীতের গল্প শোনায়। এভাবেই এগিয়ে যায় নাটকটির কাহিনী।
মিলাদ বড় ভূঁইয়ার রচনা ও পরিচালনায় নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন টয়া, নিলয় আলমগীর, নাসিমা খানম প্রিমা, ইমরান সানী, শিখা কর্মকার, জামাল উদ্দিন লোটাস, নাসির, সুবর্ণা মীর,সাইমা,হায়দার সিদ্দিক, দ্বীপ প্রমুখ। নাটকটি ঈদের ষষ্ঠদিন রাত ১১ টায় দীপ্ত টিভিতে প্রচারিত হবে। নির্মাতা জানান, শুধু বিনোদনের জন্য নাটক নির্মাণ করতে আসিনি। সমাজের মানুষকে ভালো কিছু দেয়ার জন্যই নাটকের অঙ্গণে এসেছি। নাটক যেহেতু সমাজের দর্পণ, সেহেতু নাটকের মাধ্যমেই সমাজের নানা সঙ্গতি-অসঙ্গতি তুলে ধরতে চাই। এই নাটকটিতে শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। আমার প্রতিটি নাটকেই শিক্ষণীয় ও জনসচেতনতামূলক বার্তা থাকবে। নাটকটি নির্মাণে শিল্পী ও কলাকুশলীরা আন্তরিক সহযোগিতা করেছে। বাংলা মিডিয়ার প্রযোজনায় নাটকটির নির্বাহী প্রযোজক আবু মুসা ইমরান আহমেদ সানী।
আপনার মন্তব্য দিন