ছায়াছন্দ ডেস্ক : আজ ৮ মার্চ, বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর সম – অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯১৪ সাল থেকে এই দিনটি বিভিন্ন দেশ নারী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। আর ১৯৭৫ সাল থেকে জাতিসংঘ দিনটি ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে পালন করছে।
সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হয়। এবার নারী দিবসের প্রতিপাদ্য – ‘করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’।
আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে জাতীয় পর্যায়ের ৫ জনকে ‘শ্রেষ্ঠ জয়িতা’ সম্মাননা দিয়েছে সরকার। সকাল সাড়ে ১০টায় শিশু একাডেমি মিলনায়তনে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাদের হাতে এক লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেবেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা ।
বিকেল ৪টায় ৬৭টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে অনলাইনে আলোচনা সভা হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। সভায় উন্নয়নকর্মী, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি আলোচনা করবেন।
জানা যায়, দিবসটি উপলক্ষে দেশের জাতীয় গণমাধ্যম বিশেষ সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করেছে। বিভিন্ন সংগঠন ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টারের মাধ্যমে দিবসটি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে।
যেভাবে এলো আন্তর্জাতিক নারী দিবস :
১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি সুচ কারখানার নারী শ্রমিকরা দৈনিক শ্রম ১২ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে আট ঘণ্টায় আনা, ন্যায্য মজুরি এবং কর্মক্ষেত্রে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন। আন্দোলন করার অপরাধে ওই সময় গ্রেফতার হন অসংখ্য নারী। আর কারাগারে নির্যাতিত হন অনেকেই।
এর ঠিক তিন বছর পরে ১৮৬০ সালের একই দিনে গঠন করা হয় ‘নারী শ্রমিক ইউনিয়ন’। ১৯০৮ সালে পোশাক ও বস্ত্রশিল্পের কারখানার প্রায় দেড় হাজার নারীশ্রমিক একই দাবিতে আন্দোলন করেন। অবশেষে আদায় করে নেন দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করার অধিকার।
১৯১০ সালের এই দিনে ডেনমাকের্র কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক সম্মেলনে জার্মানির নেত্রী ক্লারা জেটকিন ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই সারাবিশ্বে দিবসটি আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশেও।
জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক নারীবর্ষে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করা শুরুর ঘোষণা দেয়। এর দুই বছর পর ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
নারী দিবস হচ্ছে – জাতিগত, গোষ্ঠীগত, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক কিংবা রাজনৈতিক সব ক্ষেত্রে বৈষম্যহীনভাবে নারীর অর্জনকে মর্যাদা দেয়ার দিন। এদিনে নারীরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাসকে স্বরণ করে এবং ভবিষ্যতের পথ পরিক্রমা নির্ধারণ করে, যাতে আগামী দিনগুলো নারীর জন্য আরও গৌরবময় হয়ে ওঠে।
মডেল : আমেরিকা প্রবাসী অভিনেত্রী তামিমা তিথি
আপনার মন্তব্য দিন