মোহাম্মদ তারেক : আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় এসেছেন অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। তবে এবার তাকে নিয়ে আলোচনার কারণটা ভিন্ন। জানা যায়, সম্প্রতি বইমেলায় গিয়েছিলেন ভাবনা। বইমেলায় তিনি পরেছিলেন শাড়ি ও হাতাকাটা ব্লাউজ। বইমেলায় তোলা ভাবনার ওই পোশাকের ছবি দেখে সমালোচনায় মেতেছেন নেটিজেনরা। তাদের জবাব দিতেই নিজের ফেসবুক হ্যান্ডেলে ভাবনা লিখেছেন – আমার দোষ আমি হাতাকাটা ব্লাউজ পরে বইমেলায় গিয়েছি ? আমাদের নানি – দাদিরা এখনও হাতাকাটা ব্লাউজ পরেন।
নিজের একটি ছবিকে ইঙ্গিত করে ভাবনা লিখেছেন – এই ছবি পোস্ট করে আমাকে নিয়ে বাজে কথা লিখছে। অশ্লীল বলছে! যারা পোস্ট করছে তারা বেশিরভাগ পুরুষ। সব পুরুষকে খারাপ বলব কী করে ? তিনি নিজের বাবা নির্মাতা হাবিবুল ইসলাম হাবিবের প্রসঙ্গ তুলে লিখেছেন, আমার বাবা তো আমাকে কখনও বলে দেয়নি কী পোশাক পরা উচিত ? আমি কী পরব ? আমরা নারীরা কী পরব তা ঠিক করবেন আপনি ? আমার সত্যি বলার কিছু নেই।
এর পরের লাইনে ভাবনা হতাশা করেছেন – গত তিন – চার দিন ধরে আমি খুবই বিরক্ত এবং হতাশও। আমরা আসলেই কি নারীর সম্মান কখনই দিতে পারব না! ভাবনার মতে, এ সময়ে এসে স্লিভলেস ব্লাউজের কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হেয় হওয়াটা লজ্জার।
ভাবনা জানান, তিনি নিজের চেয়েও ভাবছেন সমাজের খেটে খাওয়া নারীদের কথা। তিনি এ প্রসঙ্গে লিখেছেন, আমি শুধু তাদের কথা ভাবি, যারা প্রতিদিন বাসে যায়, পার্লারে কাজ করে, রিকশায় করে বা হেঁটে বাড়ি ফেরে। প্রতিমুহূর্তে আমাদের সচেতন থাকতে হবে, কাপড় ঠিক করতে হবে ? কতটা জঘন্য এদের মানসিকতা! এরাই ধর্ষক।
ভাবনা আশা করেন – সরকারের সহযোগিতায় এ ধরনের অপরাধ কমবে। তার মতে, আমাদের সরকার, আমাদের পুলিশ যদি একটু সহায়তা করত তা হলে এসব অপরাধ অনেকটা কমে যেত। সাইবার ক্রাইমের তত্ত্বাবধানে যদি ১০ জন এ রকম অপরাধীকে ধরে শাস্তি দেওয়া যেত তা হলে একটা দৃষ্টান্ত তৈরি হতে পারত। এ দৃষ্টান্ত এমন অপরাধ অনেক কমিয়ে দিতে পারত।
জানা যায়, ভাবনা গেলো কয়েক বছর ধরে নিয়মিত লেখালেখি করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর বইমেলায় এসেছে তার লেখা দুটো বই। একটি উপন্যাস ‘গোলাপী জমিন’, অন্যটি কাব্যগ্রন্থ ‘রাস্তার ধারের গাছটির কোনো ধর্ম ছিলো না’। ইতিপূর্বে ভাবনার লেখা ‘গুলনেহার’ ও ‘তারা’ শীর্ষক দুটো উপন্যাস বের হয়। ভাবনা বইমেলা প্রসঙ্গে বলেন, আমি এবার দুদিন বইমেলায় গিয়েছি। করোনার প্রকোপ বাড়ায় লকডাউনে বইমেলায় যাচ্ছি না। কারণ, আমি গেলেই লোকজনের ভিড় বেড়ে যায়।
নিজের লেখা বই কেমন চলছে জানতে চাইলে ভাবনা বলেন, উপন্যাস সাধারণত পাঠক বেশি পড়ে। তবে এখন পর্যন্ত বই দুটো ভালো বিক্রি হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও পাঠকরা তাদের অনুভূতি আমাকে জানাচ্ছে।
এদিকে জানা গেছে, ভাবনা চলতি লকডাউনে শুটিং করছেন না। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি এখন কোনো কাজ করছি না। ঈদের কাজ নিয়েও কিছু বলতে পারছি না। ভাবনা আপাতত কাজ না করলেও ভাবনা সম্প্রতি তিনি অভিনয় করেছেন অনিমেষ আইচের ধারাবাহিক ‘এখানে কেউ থাকে না’ নাটকের। এটির ৩০ পর্বের শুটিং শেষ করেছেন বলে তিনি জানান। এ প্রসঙ্গে ভাবনা বলেন, ‘অনিমেষ আইচের কাজ গোছানো হয়। অপ্রয়োজনীয় কোনো ফুটেজ নেওয়া হয় না। আর এখানে এমন শিল্পী ছিলেন, যারা ধারাবাহিকে কাজ করেন না। চমৎকার একটি কাজ হয়েছে। সামনে আরও কিছু পর্বের শুটিং হবে।
কথায় কথায় একটি চমকের আভাস দিলেন ভাবনা। তবে তা এখনই নয়, সময় হলেই তা প্রকাশ করবেন বলে জানান এই সুন্দরী অভিনেত্রী।
আপনার মন্তব্য দিন